ইয়াসির আরাফাত – ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি ( দিনাজপুর )
নবাবগঞ্জের হরিপুর মৌজার বস্তাপাড়ায় অবৈধভাবে বনবিভাগের হরিপুর বিটের উডলট বাগানের প্রায় পাঁচ শত(৫০০) আকাশমণি গাছ কর্তন সহ প্রবৃদ্ধিজনিত বন ও পরিবেশের প্রায় পঁচিশ লাখ টাকা সমমূল্যের সম্পদের ক্ষতিসাধন করছে দুর্বৃত্তরা। চরকাই রেঞ্জের অধীন হরিপুর বিট কর্মকর্তা মোঃ শামসুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
হরিপুর বিট কর্মকর্তা মোঃ শামসুল ইসলাম জানান, ২০২০-২১ অর্থবছরে হরিপুর মৌজার বি এস-১৫০৩ খতিয়ানে ১৬৮৩ দাগে ২.৮৪ একর এবং ১৬৮৫ দাগে ২.৬৯ একর বনভূমি বনবিভাগের আওতাভুক্ত। এর মধ্যে ২.৫০ একর জায়গায় উডলট বাগান সৃজন হয়েছে। বনবিভাগ ও উপকারভোগী সদস্যগণ উক্ত বাগান গুলি দেখাশোনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছেন।
বিট কর্মকর্তা শামসুল ইসলাম অভিযোগ করেন চলতি ২০২৪ সালের ১৬ অক্টোবর ১।মোঃ কামরুজ্জামান(৩৮),পিতা-মৃত কুশা মন্ডল, গ্রাম- রঘুনাথপুর মোহাম্মদপাড়া, ২। মোঃ আব্দুল খালেক(৫৫), পিতা- মৃত শরবেশ আলী মন্ডল,গ্রাম – হরিপুর মন্ডবচান এবং ৩। মোঃ সুজাত আলী মন্ডল, পিতা-মৃত কুশা মন্ডল, গ্রাম- হরিপুর লাইকারচড়া এদের প্রত্যক্ষ মদদে ও সরাসরি উপস্থিতিতে এদের সহযোগী হিসেবে অভিযুক্ত কামরুজ্জামানের পুত্র মোঃ আনন্দ (২০), আব্দুল খালেকের পুত্র মোঃ অন্তর ওরফে সোহাগ (২০) ও অভিযুক্ত সুজাত আলী মন্ডলের পুত্র মোঃ সাগর বাবু(২৫) সহ অজ্ঞাতনামা আরও ৮-১০ জন ধারলো দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে উডলট বাগানের ১০০ টি আকাশমণি গাছ কর্তন করে। উক্ত অভিযুক্তগণ ঘটনার ১৫ -১৬ দিন পূর্বেও একই কায়দায় বনবিভাগের সম্পত্তির হরিপুর মৌজার প্রায় ৪০০ টি আকাশমণি গাছ অবৈধভাবে কর্তন করে সেখানে কলাই বীজ বপন করে। ১৬ অক্টোবর ২০২৪ হরিপুর বিট কর্মকর্তা শামসুল ইসলাম উপকারভোগী সদস্যদের নিয়ে কিছু আকাশমণি গাছ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে বিট কার্যালয়ে নিয়ে আসেন।
সরেজমিনে পরিদর্শন করে এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরা ঘটনার সত্যতার বিবরণ দেন।
রঘুনাথপুর গ্রামের আলহাজ্ব মোঃ খোরশেদ আলম ও হরিপুরের মোঃ নজরুল ইসলাম অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতার কথা জানান এবং তাদের জবানবন্দি প্রদান করেন।
অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও, তাদের সাথে যোগাযোগ বা তাদের জবানবন্দি নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বিট কর্মকর্তা শামসুল ইসলাম নবাবগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এবং নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছেও অভিযোগ করেছেন।
নবাবগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ এবং নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাকে দোষীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন।
কিন্তু বিট কর্মকর্তা শামসুল ইসলামের দাবী দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযুক্ত কামরুজ্জামান, আব্দুল খালেক ও সুজাত আলী মন্ডলসহ যারা জড়িত তাদের গ্রেফতার করে বন ও পরিবেশের ক্ষতিসাধনের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যাবস্থা করা হয়, যাতে করে আর কেউ এধরণের অপরাধ করার সাহস না পায়। এজন্য প্রশাসনের উর্ধ্বতন কতৃপক্ষেরও সুদৃষ্টি কামনা করেন হরিপুর বিটের এই কর্মকর্তা।
প্রথম / আরডি