রুপন দত্ত – আনোয়ারা, চট্টগ্রাম
স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন-২০০৯-এর অস্পষ্টতায় একজন নাগরিক কত টাকা দিয়ে সেবা পাবেন, তা নির্ধারণ করাই আছে । তারপরও ইউপি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে নাগরিক সনদ, চারিত্রিক সনদ, জন্মনিবন্ধন, মৃত্যুনিবন্ধন এসব সনদ নিতে গেলে খুব সহজেই নিতে পারে সরকার নির্ধারিত ফি দিয়ে।কিন্তু ওয়ারিশ সনদ পেতে গুণতে হয় প্রকার ভেদে লাখ লাখ টাকা। পরবর্তীতে সরকার একটি আদেশের মাধ্যমে বেশ কয়েকটি সেবাকে ফ্রী করে দেই।কিন্তু সেই আদেশকে একপ্রকার অমান্য করে বিশেষ করে ওয়ারিশ সনদ নিয়ে আনোয়ারার বিভিন্ন ইউপি চেয়ারম্যানরা হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। অভিযোগ রয়েছে একই পরিবারের কোন সদস্যকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে ওয়ারিশ সনদ। ফলে এসব নিয়ে এখনো চলছে মামলা,সালিশ দরবার।মূলতঃ মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এসব ওয়ারিশ সনদ বানিজ্য করেছিল ইউপি চেয়ারম্যানরা। টানেল হওয়ার পর থেকে আনোয়ারার জায়গার মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ওয়ারিশ সনদ নিয়ে বানিজ্য শুরু করে ইউপি চেয়ারম্যানরা। একমাত্র ওয়ারিশ সনদ বানিজ্য করেই কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যান হয়ে গেছেন কোটিপতি। কারো ওয়ারিশ সনদ প্রয়োজন হলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে আবেদন করতে হয়। আর আবেদন করা লোকের স্ব স্ব ইউপি সদস্যরা এটি যাচাই বাছাই করে তারা একটি সুপারিশ করে ওয়ারিশ সনদ দেওয়া বা কোন সমস্যা থাকলে তা নিয়ে মতামত দিয়ে থাকে।এরপর চেয়ারম্যান এই ওয়ারিশ সনদ প্রদান করে থাকে।কিন্তু আনোয়ারায় চিত্রটা একটু ভিন্ন। ইউপি সদস্যরা সুপারিশ করলেও অনেক চেয়ারম্যান তা আটকিয়ে রাখে। আর তখনই শুরু হয় দরকষাকষি। অবস্থার উপর নির্ভর করে তখন ওয়ারিশ সনদ নিতে সেই লোককে দিতে হয় বিপুল অংকের টাকা। আর হয়রানি কিংবা অন্য যেকোন কারনে তারাও চেয়ারম্যান এর চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিতে বাধ্য হন। এই নিয়ে আনোয়ারার অনেক ইউনিয়নের বাসিন্দাদের মনে চাপা ক্ষোভ রয়েছে। কিন্তু এতোদিন সেসব চেয়ারম্যানদের ক্ষমতার ভয়ে তাদের চুপ থাকতে হয়েছিল। আর সেসব চেয়ারম্যানরা তাদের অবৈধ ক্ষমতার জোরে শুধুমাত্র ওয়ারিশ সনদ বানিজ্য করেই কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেক ভুক্তভোগী এতোদিন চেয়ারম্যানদের ভয়ে চুপ করে থাকলেও এখন তারা মুখ খুলতে শুরু করেছে।বিশেষ করে আনোয়ারার কয়েকটি ইউনিয়ন এর চেয়ারম্যানদের ওয়ারিশ সনদ এর বানিজ্য ছিল ওপেন সিক্রেট। আর এটি করেই কোটিপতি হয়েছেন বেশ কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যান। এখন সরকারের পতনের পর আনোয়ারাবাসী এই ওয়ারিশ সনদ নিয়ে কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে চান।এই বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।