প্রথম ডেক্স –
স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন-২০০৯-এর স্পষ্টতায় একজন নাগরিক কত টাকা দিয়ে সেবা পাবেন, তা নির্ধারণ করাই আছে । তারপরও ইউপি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে নাগরিক সনদ, চারিত্রিক সনদ, জন্মনিবন্ধন, মৃত্যুনিবন্ধন এসব সনদ নিতে গেলে খুব সহজেই নিতে পারে সরকার নির্ধারিত ফি দিয়ে। পরবর্তীতে সরকার একটি আদেশের মাধ্যমে বেশ কয়েকটি সেবাকে ফ্রী করে দেই। তার মধ্যে ওয়ারিশ সনদ অন্যতম।কিন্তু সেই আদেশকে একপ্রকার অমান্য করে বিশেষ করে আনোয়ারার বিভিন্ন ইউনিয়নে চেয়ারম্যানদের পাশাপাশি ইউপি সদস্যরাও হাতিয়ে নিয়েছেন হাজার হাজার টাকা। কোন ওয়ারিশ সনদ নিতে হলে প্রথমেই ইউনিয়ন পরিষদে আবেদন করতে হয়।আবেদন করার পর সেটি স্থানীয় ইউপি সদস্য তদন্ত করে পূর্ণাঙ্গ একটি সুপারিশ করে রিপোর্ট দেই। সেই সুপারিশ এর উপর ভিত্তি করেই ইউপি চেয়ারম্যান ওয়ারিশ সনদ প্রদান করেন। আর এই সুপারিশ দেওয়ার সুযোগ নিয়ে প্রকার ভেদে বিভিন্ন সময় ইউপি সদস্যরা সর্বনিম্ন পাঁচ, বিশ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ পঞ্চাশ টাকার টাকা পর্যন্ত। অনেক ক্ষেত্রে টাকার অঙ্কটা লাখ টাকাও ছাড়িয়ে যায় বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। অনেক ক্ষেত্রে ইউপি সদস্যরা ইউপি চেয়ারম্যান এর বাইরে কথা বলতে পারেনা তাই অনেকটা বাধ্য হয়েও চেয়ারম্যান এর হুমকি ধমকিতে তারা চেয়ারম্যান এর কথামতো সুপারিশ করতে বাধ্য হন। আনোয়ারা উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে চার পাঁচটি ইউনিয়নের ইউপি সদস্যরা চেয়ারম্যান এর কথার বাইরে যেতে পারেনা।এটা নিয়ে অনেক ইউপি সদস্যদের মধ্যে রয়েছে চাপা ক্ষোভ। টানেল এবং আনোয়ারাকে শিল্পাঞ্চল ঘোষণা করার পর থেকে জায়গার মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ওয়ারিশ সনদ নিয়ে বানিজ্য শুরু করে কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যান। আর যেহেতু ইউপি সদস্যদের সুপারিশ প্রয়োজন হয় তাই অনেক সময় ইউপি সদস্যদের বাধ্য করেন ইউপি চেয়ারম্যানরা। আবার অনেক সময় চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য মিলে এই ওয়ারিশ সনদ বানিজ্যে লিপ্ত হয় । অবস্থার উপর নির্ভর করে তখন ওয়ারিশ সনদ নিতে সেই ভুক্তভোগীকে দিতে হয় বিপুল অংকের টাকা। আর হয়রানি কিংবা অন্য যেকোন কারনে তারাও চেয়ারম্যান আর ইউপি সদস্যদের এর চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিতে বাধ্য হন। এই নিয়ে আনোয়ারার অনেক ইউনিয়নের বাসিন্দাদের মনে চাপা ক্ষোভ রয়েছে। কিন্তু এতোদিন সেসব চেয়ারম্যানদের ক্ষমতার ভয়ে তাদের চুপ থাকতে হয়েছিল। আর সেসব চেয়ারম্যানরা তাদের অবৈধ ক্ষমতার জোরে শুধুমাত্র ওয়ারিশ সনদ বানিজ্য করেই কোটি টাকার মালিক আর তাদের সাথে কিছু ইউপি সদস্যরা হয়েছে লাখো পতি। আর গুটি কয়েক ইউপি চেয়ারম্যান আর সদস্যদের কারনে এখনো অনেক ভুক্তভোগীরা সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।