চট্টগ্রাম প্রতিনিধি –
চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নিবন্ধিত গ্রাম সিএনজি চালিত অটোরিকশার চেয়ে অনিবন্ধনের সংখ্যা কয়েকগুন বেশি। দীর্ঘ বছর ধরে সরকারকে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে গাড়িগুলো যাত্রী পরিবহন করছে। অনিবন্ধিত গ্রাম সিএনজি অটোরিক্সাগুলো দ্রুত সময়ে নিবন্ধনের আওতায় না এলে শিগগিরই অভিযান শুরু করবে বিআরটিএ ও জেলা পুলিশ। প্রয়োজনে এসব অনিবন্ধিত গ্রাম সিএনজি অটোরিকশা আটক করে ডাম্পিংয়ে নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় তিনি এ হুঁশিয়ার উচ্চারণ করেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, অনিবন্ধিত গ্রাম সিএনজি অটোরিক্সাগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে নিবন্ধনের আওতায় না এলে শিগগিরই অভিযান শুরু করবে বিআরটিএ ও জেলা পুলিশ। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এসব অনিবন্ধিত গ্রাম সিএনজি অটোরিকশা আটক করে ডাম্পিংয়ে দেওয়া হবে।
একইসঙ্গে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালী, আনোয়ারা ও উত্তর চট্টগ্রামের কোন উপজেলার কোথায় ডাম্পিং স্টেশন করা যায় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের জায়গা খুঁজে তালিকা দিলে যাচাই-বাছাই করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
ফরিদা খানম বলেন, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, বালি উত্তোলন, পাহাড় কাটা, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, খুন, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, রাহাজানি, নারী ও শিশু নির্যাতন রোধ, কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ, রেলপথ, নৌ-পথ ও সড়ক পথে মাদক পাচার রোধ এবং বন্য হাতি থেকে জানমাল রক্ষায় সংশ্লিষ্ট সকলকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
সভায় জেলার নবাগত পুলিশ সুপার (এসপি) রায়হান উদ্দিন খান বলেন, জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ বাহিনী কাজ করছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতি শেষে থানাগুলোকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। অর্ন্তবর্তী সরকারের নির্দেশনা মতে থানাগুলোর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) পরিবর্তন করা হয়েছে। চলতি সেপ্টেম্বরের মধ্যে থানাগুলো আবার নতুনভাবে সাজবে। থানায় গিয়ে দলমত নির্বিশেষে সবাই সমান সেবা পাবে।
তিনি বলেন, গত ৫ আগস্টের পর রাউজান, লোহাগাড়া, হাটহাজারী থেকে বেশ কিছু অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট হয়েছে। তার মধ্যে কিছু কিছু উদ্ধার হয়েছে। আর যেসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ এখনো উদ্ধার হয়নি সেগুলো উদ্ধারে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
এসপি আরো বলেন, সঠিক ঘটনায় থানায় মামলা নিতে পুলিশ গড়িমসি করবে না। সাংবাদিকদের নামেও মামলা হচ্ছে। তবে যারা ঘটনার সাথে জড়িত নয়, তাদের মামলায় যুক্ত না করার জন্য সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
জেলার নবাগত সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, চট্টগ্রাম জেলায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলার ১৫ উপজেলার মধ্যে লোহাগাড়া, সাতকানিয়া ও বাঁশখালীতে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত আগস্ট মাসে চট্টগ্রামে ২০২ জন ও চলতি মাসের এ পর্যন্ত ৩৪৫ জন ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত হয়েছে। তাদের চিকিৎসা চলছে। সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্ভব।
অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এনএসআই’র যুগ্ম পরিচালক শাহ সুফি নুর আলম সরকার, সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভশনের ক্যাপ্টেন ফায়িজ, বিজিবি’র সহকারী পরিচালক মফিজুল ইসলাম, র্যাবের এএসপি মো. নাসির উদ্দিন, কোস্টগার্ড প্রতিনিধি লেঃ কর্ণেল মোসাব্বির, নৌবাহিনী প্রতিনিধি লেঃ সিফাত রাব্বি আশরাফ চৌধুরী, আনসার ভিডিপির জেলা কমান্ড্যান্ট ফরিদা পারভীন সুলতানা, সিএমপি’র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (অপস্) বাবুল চন্দ্র বণিক, আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ তাজবিল্লাহ, বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক রায়হানা আক্তার উর্থী, ভোক্তা অধিকার জেলার সহকারী পরিচালক নাসরিন আক্তার।
এছাড়াও চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও), সীতাকুণ্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবিএম নায়হানুল বারী বক্তব্য রাখেন।
প্রথম /আরডু