১৮৫ টাকার মুরগি এখন ২৩০ টাকা
উৎসব মানুষের মনে এনে দেই খুশির আমেজ। আর উৎসব আসলেই আমাদের দেশে আনন্দের সাথে সাথে বেড়ে যায় দুশ্চিন্তা। কারন যেকোন উৎসব এলেই বেড়ে যায় যেকোনো পণ্যের দাম। তবে গত বছরের তুলনায় এই রজমানে ইফতারি আইটেম থেকে শুরু করে অনেক নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম সহনীয় ছিল। সেই তালিকায় ছিল ব্রয়লার মুরগিও। ক্রেতাদের ধারণা ছিল, দাম যা-ই হোক, পুরো রমজানজুড়ে এবার অন্তত মুরগির দামে স্বস্ত্বি থাকবে। তবে সেটি আর স্থায়ী হয়নি। শবে কদর ও ঈদকে ঘিরে ব্যবসায়ীরা ফিরে গেছেন সেই পুরনো লোভের খেলায়। তারই ধারাবাহিকতায় বয়লার মুরগি সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ১৮৫-১৯০ টাকা থেকে বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ২৩০ টাকায়। রমজানের শেষ সময়ে এসে ব্যবসায়ীরা তাদের মুখোশ খুলে দিয়েছে। তাদের অজুহাত চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় মূল্য বৃদ্ধির কারন।
ক্রেতা ও বিক্রেতারা বলছেন, শবে কদর ও ঈদের সময় মুরগির চাহিদা বাড়তি থাকে। সেই চাহিদাকে পুঁজি করে দফায় দফায় মুরগির দাম বাড়ানো হচ্ছে। গত সপ্তাহ থেকে বাজারে প্রতিদিনই মুরগির দাম ওঠানামা করেছে।
আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। এদিকে, প্রতিকেজি সোনালি মুরগি ৩১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রমজানের আগে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১৮০ টাকা করে। রমজানের প্রথম সপ্তাহে সেটি পাঁচ টাকা বেড়ে ১৮৫ টাকায় বিক্রি হয়। এরপরের সপ্তাহে আরো পাঁচ টাকা বেড়ে বিক্রি হয় ১৯০ টাকায়। তবে গত সপ্তাহের প্রথম দিন শনিবার (২২ মার্চ) থেকে বেড়েছে মুরগির দাম। যা প্রতিকেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে ২২০ টাকায় বিক্রি করা হয়। মাঝে একদিন এ মুরগির দাম ১০ টাকা কমলেও ফের শবে কদর এবং ঈদকে সামনে রেখে মুরগির দাম ঠেকে ২৩০ টাকায়।
মুরগি ব্যবসায়ীদের দাবি, ঈদের সময় ব্রয়লার মুরগির চাহিদা একটু বেশি থাকে। সেই অজুহাতে খামারিরা মুরগির দাম বাড়িয়ে দেয়। ঈদের আগের দিন হয়তো মুরগির দাম আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা ব্যবসায়ীদের।
রেয়াজ উদ্দীন বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমাদের তো কিছু করার নেই। আমরা বাড়তি দামেই মুরগি কিনে এনেছি। যখন যে দামে কিনতে হয় আমরা সেই দামেই মুরগি বিক্রি করি।’
মো. এমরান নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘গত সপ্তাহে মুরগি কিনেছিলাম ১৯০ টাকা করে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সেই মুরগির দাম ৪০ টাকা বেড়ে গেছে। এখন মুরগি কিনতে হচ্ছে ২৩০ টাকায়।
এদিকে মুরগি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আর কয়েকদিন পর ঈদ। রোজার ঈদের আগে মুরগির দাম সাধারণত কিছুটা বাড়ে। আর আজ শবে কদর; এ দিন মুরগির চাহিদাও বেশি থাকে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, চাহিদাকে পুঁজি করেই ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দেই। ব্যবসায়ীরা তো কোনো একটা অজুহাতের অপেক্ষায় থাকে। সেই অজুহাত দেখিয়েই দাম বাড়ানোর পায়তারা করে। যতটুকু জানতে পেরেছি, খামারে যথেষ্ট পরিমাণ মুরগি রয়েছে। সাপ্লাইয়ে কোনো ধরনের সংকট নেই। এরপরও কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে ব্যবসায়ীরা মুরগির দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে।’
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ বলেন, এখন দামপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করছি। মুরগির বাড়তি দামের বিষয়টি তারা দেখছে বলে জানান।

প্রথম / আরডি